দার্জিলিং সমন্ধে জানা অজানা প্রশ্ন উত্তর
০ দার্জিলিং ০
আয়তন:
৩,১৪৯ বর্গ কিমি।
জনসংখ্যা:
(২০০১) ১৬,০৫,৯০০ জন। (পুরুষ-৮,২৫,৩৩৪ জন এবং মহিলা-৭,৭৯৫৬৬ জন। )
জনঘনত্ব:
৫১০ জন প্রতি বর্গকিমিতে।
সাক্ষরতার হার:
এই জেলায় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় (স্থাপিত ১৯৬২) অবস্থিত। শিক্ষিতের হার মােট ৮১.২৮ শতাংশ ও মহিলা ৬৩.৯২ শতাংশ।
ভাষা:
দার্জিলিং-এ নেপালি, তিব্বতি, ভুটিয়া, কোচ, রাজবংশী, মুন্ডা, ওরাও, মাড়ােয়ারি পাঞ্জাবি প্রভৃতি মানুষের সমাবেশ ঘটেছে। তাই দার্জিলিংকে বলে ‘Babel of Tribes and Nations'। এর প্রভাব পড়েছে জেলার ভাষা ও সংস্কৃতির ওপরও । ফলে দার্জিলিং কোনাে এক নির্দিষ্ট ভাষাভাষি অঞ্চল হয়ে উঠতে পারেনি। পাহাড়ি অঞ্চলে চলিত বা কথ্য ভাষা নেপালি বা গােখালি। এছাড়া নেপালি ভাষার সঙ্গে হিন্দিরও মিশ্রণ ঘটেছে। সমতল ভূমিতে রাজবংশী উপভাষার প্রচলন আছে। একমাত্র লেপচারাই আজও তাদের মাতৃভাষা রংরিং পরিত্যাগ করেনি। মিরিক (পােড়া পাহাড়), ফালুট (জঙ্গলহীন পর্বতশৃঙ্গ), সিবক (যেখানে ঠান্ডা বাতাস বয়) প্রভৃতি লেপচা শব্দ। কাঞ্চনজঙ্ঘা (বরফের পাঁচটি বিরাট ভাণ্ডার), নক্সল (শিকারের বনভূমি) প্রভৃতি তিব্বতী শব্দ।
জেলার কৃষি ফসল:
জেলার প্রধান প্রধান নদী:
পর্বত:
মহালধিরাম ও দূরবীনদারা পর্বত এই জেলায় অবস্থিত। পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ পর্বত সান্দাকফু (৩,৬৩০ মি.) এই জেলাতেই।
শৈলশিরা:
নেপাল ও দার্জিলিং সীমান্তে সিংগালিলা, ঘুম পাহাড়, দার্জিলিংস-লেবং ও ডাউহিল, ফালুট, টাংলু, সবরগ্রাম, টাইগারহিল, মণিভঞ্জন ও ঋষিলা শৈলশিরা এই জেলার মূল আকর্ষণ।
মহকুমার সংখ্যা:
(১৯৯৮) ৪টি—দার্জিলিং সদর, শিলিগুড়ি, কার্শিয়াং, কালিম্পং।
রেলপথ:
শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাওয়ার ট্রয়ট্রেন ইউনিসেফ কর্তৃক 'ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ'-এর সম্মান পেয়েছে।
লােকসভা আসন:
১টি দার্জিলিং।
বিধানসভা আসন:
৫টি—দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, কার্শিয়াং, কালিম্পং, ফাঁসি দেওয়া (ST)।
গ্রাম পঞ্চায়েত:
(১৯৯৯) ২১ টি (দার্জিলিং হিল কাউন্সিল-এর মধ্যে ধরা হয়নি)।
পঞ্চায়েত সমিতি:
(১৯৯৯) ৪টি।
থানা:
২৭টি। এছাড়া গােৰ্খা পার্বত্য পরিষদ ও শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এখানে অবস্থিত।
পুরসভা:
দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, কার্শিয়াং কালিম্পং, মিরিক।
উৎসব:
এই অঞলে রাজবংশীদের রাধাকৃষ্ণের লীলাবিষয়ক কাহিনিভিত্তিক নটুয়া পালা, পাহাড়ি অঞলে নেপালিদের দশৈ, তিহার প্রভৃতি উৎসব পালিত হয়।
দর্শনীয় স্থান:
তিস্তা নদীর ডানদিকে শিলিগুড়ি মহকুমা ও জলপাইগুড়ি অঞ্চলকে তরাই অঞ্চল বলে এবং বাঁদিকে কালিম্পং, লাবা, গরুবাথানসহ ভুটান রাষ্ট্রকে ‘ডুয়ার্স অঞ্চল’ বলে। ভারতের উচ্চতম রেলস্টেশন ‘ঘুম’, টাইগারহিল, মিরিক, কার্শিয়াং, লাভা, রক গার্ডেন, শকুনালেক, তেনজিং নােরগে মিউজিয়াম এই জেলার প্রধান দ্রষ্টব্য স্থান।
সংক্ষেপে দার্জিলিং সমন্ধে আরো কিছু তথ্য
- দোর্জে - লিং থেকে দার্জিলিং শব্দের উৎপত্তি। দোর্জে অর্থ বজ্র এবং লিং অর্থ স্থান। অথাৎ ‘বজ্র দেশ'। এই জেলার প্রথান নদী তিস্তা ও জলঢাকা।
- দার্জিলিং নাইস শিলা দ্বারা গঠিত।
- রায়তাল ও মিরিক দুটি উল্লেখযােগ্য কৃত্তিম হ্রদ।
- এখানকার সিদ্ৰাপং জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ভারতের প্রথম জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
- এই জেলার রঙিত নদীর উপত্যকায় পাইন গাছ জন্মায়।
- চা এখানকার প্রধান অর্থকরী ফসল।
- দার্জিলিং-এর বাসিন্দা হলেন—ননালী, ভুটিয়া, লেপচা।
- এখানকার উল্লেখযােগ্য ফসল হল—এলাচ, কমলালেবু, আদা।
- মংপুতে রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্ৰাণাধীন সিঙ্কোনা চাষের কেন্দ্র আছে।
- দার্জিলিং-এর ট্রয়ট্রেন পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়।
- দার্জিলিং তথা পশ্চিমবঙ্গের উচ্চতম স্থান সান্দাকফু (৩,৬০০মি.)।
- কার্শিয়াংকে বলা হয় ‘ল্যান্ড অব হােয়াইট অর্কিড’।
- জাতিগােষ্ঠীর বিভিন্নতার জন্য এই জেলাকে বলা হয় “Babel of tribes and nations”।
- লেপচাদের মাতৃভাষা—রং-রিং।
- কতগুলাে উপভাষার অর্থ হল—মিরিক–পােড়াপাহাড়, ফালুট—জঙ্গলহীন পর্বতশৃঙ্গ; কাঞ্চনজঙঘা—বরফের পাঁচটি বিরাট ভাণ্ডার; নকশাল—শিকারের বনভূমি।
- তরাই অঞ্চলের বিশেষ সম্প্রদায়ের আলাদা উৎসব যেমন—রাজবংশী-নটুয়াপালা; নেপালীদের—দশে, তিহার।
- নোবেল জয়ী সাহিত্যিক মার্ক টোয়েন এই শহরে আসেন—1873 সালে।