ভারতের কেন্দ্রীয় আইনসভা সংসদ পার্লামেন্ট
১.পার্লামেন্ট :
ভারতের কেন্দ্রীয় আইনসভা সংসদ বা পার্লামেন্ট নামে পরিচিত। ভারতীয় সংসদ ব্রিটেনের সংসদীয় শাসনব্যবস্থার অনুকরণ করেছে। পার্লামেন্ট রাষ্ট্রপতি, রাজ্যসভা ও লােকসভা নিয়ে গঠিত। ভারতীয় সংসদ দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা। লােকসভা হল নিম্নকক্ষ। ভারতের জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক কক্ষ। রাজ্যসভা হল উচ্চকক্ষ। ভারতের অঙ্গরাজ্যগুলির প্রতিনিধিত্বমূলক কক্ষ।
২. লােকসভা :
লােকসভা হল সংসদের নিম্নকক্ষ। এই কক্ষের সদস্যরা প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচকমন্ডলীর দ্বারা নির্বাচিত হন। ১৯৮৯ খ্রিঃ ৬১ তম সংবিধান সংশােধন অনুযায়ী ন্যুনতম ১৮ বছর বয়সী ভারতীয় নাগরিক সর্বজনীন ভােটাধিকার প্রয়ােগের মাধ্যমে লােকসভার ৫৪৩ জন সদস্যকে সরাসরি নির্বাচিত করবেন। রাষ্ট্রপতি মনে করলে ২ জন অ্যাংলাে ইন্ডিয়ান সদস্য মনােনীত করবেন। সংবিধানের ৩১ তম (১৯৭৩ খ্রিঃ) সংশােধন অনুযায়ী বর্তমান লােকসভা ৫৪৫ জন সদস্য (৫৪৩ জন নির্বাচিত + ২ জন মনােনীত)-দেব নিয়ে ' গঠিত হয়েছে। তবে আইন অনুসারে লােকসভা সর্বাধিক ৫৫০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হতে পারে। লােকসভার ৮৪ জন তফশিলি জাতি ও ৪৭ জন তফশিলি উপজাতিদের জন্য আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।
লােকসভায় নির্বাচিত হওয়ার যােগ্যতা হল, বয়স নূ্যনতম ২৫ বছর, ভারতের নাগরিক ও সংসদ প্রণীত আইন অনুসারে অন্যান্য যােগ্যতা, এটি অস্থায়ী কক্ষ। সাধারণত পাঁচ বছরের জন্য লােকসভার সদস্যরা নির্বাচিত হন।
৩. স্পীকার :
সভার কাজ পরিচালনার জন্য লােকসভার সদস্যরা নিজেদের মধ্য থেকে অধ্যক্ষ (স্পীকার) ও ডেপুটি স্পীকার নির্বাচন করেন। স্পীকার অনুপস্থিতে ডেপুটি স্পীকারের সভা চালান। স্পীকার লােকসভার অধিবেশন কবে শর ও শেষ হবে এবং কোন কোন্ দিন অধিবেশন বসবে তা তিনিই স্থির করবেন। কোনাে বিল অর্থবিল কিনা, এ বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন স্পীকার। স্পীকার লােকসভার মুখপাত্র। স্পীকার রাষ্ট্রপতি ও লােকসভার মধ্যে যােগসূত্র স্থাপন করেন। লােকসভার সম্মান, স্বাধীনতা, নিরপেক্ষ ও মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব স্পীকার। স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ভূমিকার ভিত্তিতে স্পীকারকে বিরােধী দলগুলির আস্থা অর্জন করতে হয়। স্পীকার লােকসভায় বিভিন্ন সংসদীয় কমিটি গঠন করেন। তিনি এইসব কমিটির সভাপতিদের নিয়ােগ করেন। তিনি নিজেও সভাপতি হতে পারেন। সংসদের উভয়ক্ষ্যের যৌথ অধিবেশনে লােকসভার স্পীকার | সভাপতিত্ব করেন। সাধারণভাবে স্পীকার নিজে কোন বিষয়ের ওপর ভােটদেন না। কিন্তু যদি দেখা যায় যে কোন প্রস্তাবের পক্ষে এবং বিপক্ষে সম-সংখ্যক ভােট পড়েছে তাহলে যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় | তা দূর করার জন্য তিনি একটি ভােট দিতে পারেন। এটিকে ‘নির্ণায়ক' ভােট বলে। তিনি সদস্যদের পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করেন। লােকসভার সদস্যদের সদস্যপদ খারিজ করার বিষয়টি পুরােপুরি নির্ভর করে স্পীকারের ওপর। এছাড়া সভার সদস্য ও কর্মচারীদের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব স্পীকারের। স্পীকারের পদচ্যুত সংক্রান্ত প্রস্তাবটি অন্ততঃ ১৪ দিন আগে লােকসভায় উত্থাপন করতে হয়।
৪. লােকসভার ক্ষমতা ও কার্যাবলি :
৫. রাজ্যসভা :
৬. উপরাষ্ট্রপতি ও রাজ্যসভার ভূমিকা :
৭. লােকসভা ও রাজ্যসভার সমান ভূমিকা :
৮. সরকারী গণিতক কমিটি (Public Accounts Committee) :
৯. সংসদে বিরােধীদল :
১০. সংসদের আনুমানিক ব্যয় কমিটি :
ভারতীয় সংসদের কার্যপদ্ধতি
১. জিরাে আওয়ার :
২. মূলতুবি প্রস্তাব (Adjourmment Motion) :
৩. দৃষ্টি আকর্ষণী বিজ্ঞপ্তি (Cailling Attention Notice) :
আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
- প্রথম লােকসভার ভােট অনুষ্ঠিত হয় ১৯৫১-৫২ খ্রিঃ
- লােকসভার সবচেয়ে সদস্য বেশি উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের (৮০টি)
- লােকসভার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সদস্য বেশি মহারাষ্ট্র রাজ্যের (৪৮টি)
- রাজ্যসভার সদস্য বিচারে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে হয়েছে। যথাক্রমে উত্তরপ্রদেশ (৩১টি) ও মহারাষ্ট্র (১৯টি)
- পশ্চিমবঙ্গের লােকসভার আসন ৪২টি এবং রাজ্যসভার আসন ১৬টি।
- ২০১৪ সােকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ৪২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ৩৪টি, জাতীয় কংগ্রেস ৪টি, বিজেপি ২টি এবং সি.পি.আই (এম) ২টি আসন পেয়েছে।
- ২০১৪ ষােড়শ নির্বাচনে বি.জে.পি ৩১% ভােট পেয়েছে এবং কংগ্রেস ভােটপেয়েছে ১৯%।
- ২০১৪ ষােড়শ লােকসভা নির্বাচনে বি.জে.পি ভােট পেয়েছে ১৭ কোটি ১৬ লক্ষ এবং আসন পেয়েছে ২৮২ টি।
- ২০১৪ ষােড়শ লােকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ১০ কোটি ৭০ লক্ষ ভােট পেয়েছে এবং আসন পেয়েছে ৪৪টি।
- ২০১৪ সােড়শ লােকসভা নির্বাচনে বহুজন সমাজ পার্টি (B.S.P) ২কোটি ৩০ লক্ষ ভােট পেয়ে তৃতীয় স্থান দখল করলেও আসন শূন্য।
- লােকসভা ও রাজ্যসভার সদস্যসংখ্যা ২০২৬ খ্রিঃ (৮৪ তম সংবিধান সংশােধন) পর্যন্ত একই রকম থাকবে।
- কোন সভার সভাপতি সেই সভার সদস্য নয় - রাজ্যসভা।
- লােকসভার প্রথম ও প্রধান প্রতিনিধি হলেন স্পীকার।
- সংসদের ভাষা হল হিন্দি ও ইংরেজি।
- বছরে অন্তত ২ বার লােকসভার অধিবেশন ডাকতে হয়।
- মন্ত্রিসভাকে টিকিয়ে বা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে চুড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী লােকসভা।
- সংসদের অধিবেশন ডাকেন রাষ্ট্রপতি।
- সংসদের যুগ্ম অধিবেশন আহ্বান করেন রাষ্ট্রপতি।
- সংসদের যুগ্ম অধিবেশন সভাপতিত্ব করেন লােকসভার স্পীকার।
- বাজেট ও অর্থবিল প্রথমে রাজ্যসভায় উত্থাপন করা যায় না।
- রাজ্যসভা অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে মন্ত্রিসভাকে ভেঙ্গে দিতে পারেন না।
- অর্থবিলের বিষয়ে স্পীকারের সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত।
- রাজ্যসভা মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে নিন্দাসূচক প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারে না।
- অকারণে একাধিকক্রমে ৬০দিন রাজ্যসভার অধিবেশনে অনুপস্থিত থাকলে, সদস্যপদ বাতিল হতে পারে।
- কোন সভার বৈধ অধিবেশনের জন্য যে ন্যূনতম সংখ্যক সদস্যদের উপস্থিতি অপরিহার্য তাকে কোরাম বলে।
- বর্তমান লােকসভা (৫৪৩+২) = ৫৪৫ জন সদস্য নিয়ে গঠিত।
- বর্তমান রাজ্যসভা (২৩৩+১২) = ২৪৫ জন সদস্য নিয়ে গঠিত।
- ভারতীয় সংবিধানের ১১০ নং ধারায় অর্থবিলের সংজ্ঞা দেওয়া আছে।
- সরকার পরবর্তী আর্থিক বছরের জন্য সম্ভাব্য আয়-ব্যয়ের যে খসড়া হিসাব পেশ করে তাকে বাজেট বলে।
- সরকারী আয়-ব্যয় মূলত নিয়ন্ত্রণ করে লােকসভা।
- সংসদ অনুমােদন না করলে সরকার কোন অর্থ ব্যয় করতে পারবে না।
- মন্ত্রীগণ তাদের যাবতীয় কাজকর্মের জন্য সংসদে কৈফিয়ৎ দিতে বাধ্য থাকবেন।
- দিল্লির সংসদ ভবনটির স্থাপিত স্যার এডউইন লুটিয়েন্স ও স্যার হার্বাট বেকার। এই ভবনটি ১৯২৭ খ্রিঃ ১৮ জানুয়ারি। লর্ড আরউইন উদ্ভোধন করেন।
হ্যাঁ
উত্তরমুছুন