নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা বৈশিষ্ট ও পরবর্তী পদক্ষেপ
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা বৈশিষ্ট ও পরবর্তী পদক্ষেপ - Characteristics of the role of the Election Commission and the next steps |
১. ৩২৪ নং ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের নিয়ােগ করেন। অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের সংখ্যা সম্পর্কে সংবিধানে কিছু বলা হয় নি। ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে রাষ্ট্রপতি একটি অর্ডিন্যান্স জারী করে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করেন।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হন টি. এন. শেষন। অপর দুই জন সদস্য হলেন এম. এস গিল ও ডি. জি. কৃষ্ণমূর্তি। তিন সদস্যকে সমান ক্ষমতা ও মর্যাদা দেওয়া হয়। নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের কার্যকালের মেয়াদ হবে ৬ বছর। ৬৫ বছর পর্যন্ত তারা স্বপদে আসীন থাকতে পারবেন।
কমিশনের সদস্যদের পদচ্যুত করার ক্ষমতা সংসদ ও রাষ্ট্রপতির হাতে যৌথভাবে ন্যাস্ত রয়েছে। প্রতিটি রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সহ অন্যান্যদের নিয়ােগ করেন রাষ্ট্রপতি। জেলাশাসক পদাধিকার বলে জেলার মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক হন। জেলাগুলিতে নির্বাচনী অফিসার নিয়ােগ করা হয়। নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে ও নিয়ন্ত্রণে এঁরা দায়িত্ব পালন করেন।
নির্বাচন কমিশনের কার্যাবলী :
১. নির্বাচনের জন্য নির্বাচকমণ্ডলীর তালিকা প্রকাশ করে। লােকসভা, রাজ্যসভা, বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা ও বিধান পরিষদের নির্বাচন পরিচালনার প্রাথমিক দায়িত্ব হল ভােটদাতাদের তালিকা প্রকাশ প্রস্তুত করা। একাজে বিভিন্ন কর্মচারীদের নিযুক্ত করা হয়। প্রতিটি নির্বাচন কেন্দ্রের নির্বাচন পরিচালনার জন্য অফিসার নিয়ােগ করা হয়।
২. নির্বাচন পরিচালনা :
লােকসভা, রাজ্যসভা, রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, রাজ্য বিধানসভা এবং বিধানপরিষদের নির্বাচনের দিন ঘােষণা করতে হয়। ভােট গ্রহণ, ভােটগণনা এবং তার ফল ঘােষণা করা। বিজয়ী প্রার্থীকে সার্টিফিকেট প্রদান।
পঞ্চায়েত ও পৌরসভার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার ও রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক দায়িত্ব পালন করেন। আরও স্থানীয় স্তরে নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালিত হয় স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দ্বারা নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পূর্ববর্তী, চলাকালীন প্রয়ােজনে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে নির্বাচন আচরণবিধি প্রণয়ন করেন। নির্বাচন আচরণবিধি চালু হওয়ার পর কোন নতুন করে উন্নয়ন প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে না। নির্বাচক মণ্ডলীদের কোনভাবে প্রভাবিত করা যাবে।
৩. পরিচয় পত্র প্রদান :
নির্বাচন কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ। বর্তমানে সচিত্র পরিচয়পত্র প্রতিটি ভােটারকে প্রদান করা হয়। সচিত্র পরিচয়পত্র ছাড়া ভােটাধিকার প্রয়ােগ করতে পারবে না।
৪. নির্বাচনী প্রতীক বন্টন :
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনী প্রতীক দান কমিশনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। সর্বভারতীয় বা আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান। বর্তমানে বা ভবিষ্যতে লােকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনে একটি আসন না পেলেও রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি বাতিল হবে না— যদি সেই দল মােট বৈধ ভােটের অন্তত আট শতাংশ পেতে সক্ষম হয়। পুরনাে নিয়মে বৈধ ভােটের ছয় শতাংশ ও বিধানসভার ন্যূনতম দুটি আসনে জয়ী হলে কিংবা বিধানসভার মােট আসনের তিন শতাংশ অথবা তিনটি আসন যেটি বেশী সেই সংখ্যক আসনে জয়ী হলে রাজ্যের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি পাওয়া যেত।